পাঁচ ব্যাংক মার্জ হবে — গ্রাহকের টাকা কি ফেরত পাবে? মার্জ আসলে কী?
সম্প্রতি আলোচনায় রয়েছে—পাঁচটি ব্যাংক একীভূত (মার্জ) হতে যাচ্ছে। সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে: “আমাদের টাকা কি ফেরত পেতে হবে?” কিংবা “মার্জ মানে কি ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?” এই ধরনের প্রশ্নের উত্তর জানা জরুরি।
মার্জ আসলে কী?
মার্জ (Merger) হলো দুই বা ততোধিক ব্যাংককে একত্রিত করে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠন করা। এ প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের লাইসেন্স, শাখা, কর্মী ও সম্পদ—সব কিছুই এক ছাতার নিচে চলে আসে। সহজভাবে বললে, আলাদা আলাদা ব্যাংক মিলিয়ে একটি নতুন ব্যাংকে রূপ নেয়।
- কারণ: মূলত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে টিকিয়ে রাখতে বা আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনতে মার্জ করা হয়।
- পরিণতি: ব্যাংকের নাম, পরিচালনা কাঠামো, মালিকানা বা নীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে, কিন্তু এর মানে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়।
গ্রাহকের টাকার কী হবে?
এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—গ্রাহকের আমানত নিরাপদ থাকে।
- ব্যাংক মার্জ হলেও গ্রাহকের জমা টাকা আগের শর্তেই বহাল থাকে।
- গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট বা এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট) বাতিল হয় না, শুধু ব্যাংকের নাম বা অ্যাকাউন্ট নম্বর পরিবর্তিত হতে পারে।
- বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে মার্জ হয় বলে গ্রাহকের অর্থ ফেরত নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। বরং নতুন ব্যাংকের মাধ্যমে একইভাবে লেনদেন চালিয়ে যাওয়া যায়।
কেন মার্জ করা হয়?
- দুর্বল ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি পূরণ করতে
- ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনার জন্য
- ব্যাংকিং খাতের ঝুঁকি কমিয়ে গ্রাহকের আস্থা বাড়াতে
- আন্তর্জাতিক মানে ব্যাংককে প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য
সাধারণ গ্রাহকের করণীয়
- আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই
- ব্যাংকের নোটিশ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা লক্ষ্য করা
- অ্যাকাউন্ট বা এফডিআরের নতুন কাগজপত্র বা চুক্তি থাকলে আপডেট করে নেওয়া
শেষকথা:
ব্যাংক মার্জ মানে ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়, বরং শক্তিশালী ব্যাংক তৈরির একটি প্রক্রিয়া। গ্রাহকের টাকার কোনো ঝুঁকি নেই—বরং বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারিতে আমানত আগের মতোই সুরক্ষিত থাকে। তাই গুজবে কান না দিয়ে অফিসিয়াল তথ্যের ওপর ভরসা রাখাই শ্রেয়।

0 Comments