Ticker

6/recent/ticker-posts

টাকা দিতে অক্ষম ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কার্যকরী উপায়।

 টাকা দিতে অক্ষম ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের কার্যকরী উপায়। 

বর্তমান সময়ে কিছু ব্যাংক অর্থ সংকটে পড়লে বা দেউলিয়া হওয়ার পথে এগোলে গ্রাহকদের জন্য জমাকৃত অর্থ উত্তোলন কঠিন হয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়েন, বিশেষ করে যাদের ব্যাংকে জমাকৃত টাকা জীবনের সঞ্চয়। তবে ব্যাংক থেকে অর্থ ফেরত পাওয়ার জন্য কিছু কৌশল ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন:

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দশটি ব্যাংক। 

নিচে আমরা টাকা দিতে অক্ষম বা অর্থ সংকটে থাকা ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের কয়েকটি সম্ভাব্য উপায় আলোচনা করছি। 

১. বাংলাদেশ ব্যাংকের সাহায্য নেওয়া

যদি কোনো ব্যাংক টাকা দিতে অক্ষম হয়, তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে:

যোগাযোগ করুন: ব্যাংক সংকটে থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখায় যোগাযোগ করুন।

দাবি পেশ করুন: বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করে গ্রাহকদের দাবি অনুসারে অর্থ ফেরত দিতে সহায়তা করতে পারে।

২. ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স স্কিম ব্যবহার করা

বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে একটি ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স স্কিম আছে যা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের জন্য সুরক্ষা দেয়।

সীমাবদ্ধ সুরক্ষা: সাধারণত নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আপনার আমানতের একটি অংশ বীমা দ্বারা সুরক্ষিত।

আরও পড়ুন :

আস্থার সংকটে দেশের ১১টি ব্যাংক। 

তথ্য সংগ্রহ: আপনার ব্যাংক শাখা থেকে এ স্কিমের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে জানুন এবং বীমার আওতায় আপনার দাবির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

৩. আইনি সহায়তা গ্রহণ করা

যদি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যায় বা দীর্ঘ সময় অর্থ প্রদান না করে, তাহলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

অভিযোগ দায়ের: বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট (BFIU) অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের ইকোনমিক ক্রাইম উইং-এ অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।

মামলা করা: কোনো আইনজীবীর সহায়তায় কোর্টে মামলা করতে পারেন এবং একটি লিখিত আবেদন জমা দিতে পারেন।

৪. ঋণপত্রের প্রতিস্থাপন বা দাবিপত্র (Claim Form) দাখিল করা

যদি কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়, সাধারণত আদালত একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্ত ঋণপত্র বা দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এতে:

দাবিপত্র দাখিল: ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নোটিশ অনুযায়ী একটি দাবিপত্র জমা করুন।

সময়সীমা মেনে চলুন: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন করলে আপনার দাবি বিচারাধীন অবস্থায় নেওয়া হবে।

৫. অন্য ব্যাংকে অর্থ স্থানান্তরের চেষ্টা করা

যদি ব্যাংকের অনলাইন বা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু থাকে, তাহলে অন্য ব্যাংকে অর্থ ট্রান্সফার করে দেখতে পারেন। অনেক সময় ব্যাংক পুরোপুরি অচল না হলেও ক্যাশ ফান্ড স্বল্পতায় ভুগে, সেক্ষেত্রে অন্য অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে পারলে আপনার অর্থ উত্তোলন সহজ হবে।

৬. বিকল্প ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলা এবং আংশিক উত্তোলনের সুযোগ খুঁজুন

যদি টাকা উত্তোলনের উপর সীমাবদ্ধতা থাকে, তবে অন্য একটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলে ধীরে ধীরে আপনার অর্থ স্থানান্তর করার চেষ্টা করুন।

আংশিক উত্তোলনের জন্য আলোচনা করুন: কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংক আংশিক উত্তোলনের সুযোগ দিতে পারে।

উপসংহার

টাকা দিতে অক্ষম ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক বা আদালতের সহায়তা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সঠিক এবং স্থিতিশীল ব্যাংক নির্বাচন করা উচিত।


Post a Comment

0 Comments